কক্সবাজার সংবাদদাতা।। কক্সবাজারের টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালী পাড়া গ্রামে চাঁদাবাজি করার সময় কিছু ভূঁয়া সাংবাদিক পালিয়ে রক্ষা পেয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালী পাড়ার স্থানীয় দিন মজুর কৃষক আবদুল আলী কাছ থেকে মালেশিয়াই সাগর পথে মানব পাচার করে বলে হুমকি দিয়ে একটি মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবী করে।কিন্তু স্থানীয় দিন মজুর কৃষক তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে আজকের মধ্যে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করে।
এদিকে অনুমোদনহীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সিএনএন বাংলা নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলের মোবাইল প্রতিনিধি দিদারুল আলম জিসান এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দেন বলে ভূক্তভোগী কৃষক আবদুল আলী অভিযোগ করেন। সাথে ছিলেন কথিত সাংবাদিক নামে পরিচিত বাহারছড়ার পুরান পাড়া গ্রামের স্থানীয় রাজমিস্ত্রী মিছবাউল্লাহ ও উত্তর শীলখালীর বেকার যুবক জোবাইরুল হক।তারা দুইজনই বছর পাঁচেক আগে নৌকা যুগে অবৈধ ভাবে মালেশিয়া গিয়েছিল এবং সেখানে অবৈধ কাজে ধরা খেয়ে বছর খানেক আগে আবার বাংলাদেশে ফিরে আসে।
এ ব্যাপারে স্হানীয় সাংবাদিক রিয়াজুল হাসান খোকন বলেন,কিছু ভুঁইফোড় অনলাইন ও ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলের নাম দিয়ে অশিক্ষিত কিছু যুবক বাহারছড়ায় বিভিন্ন দূর্বল মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে। অথচ এরা সাংবাদিক বানানও করতে জানেনা। তাই স্থানীয় প্রশাসন সহ মুলধারার গণমাধ্যমকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং অপসাংবাদিকতাকে রুখতে হবে। কারণ সাংবাদিকতা জগৎ একটি জ্ঞানের সমুদ্র জগৎ যাতে এই জগৎকে কেউ খারাপ ভাবে ব্যবহার করতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
অন্যদিকে ভূক্তভোগি কৃষক আরো জানান, উল্ল্যেখিত ভূয়া সাংবাদিকরা ৭ ডিসেম্বর বিকাল ৫ টা সময় আমার এলাকায় এসে যখন চাঁদা দাবী করে তখন আমি বিভিন্ন মাধ্যমে খবর নিয়ে দেখি যে তারা আসলে কোনো সরকারী অনুমদিত টিভির সাংবাদিক না। আর আমি তাদের বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে বললে উল্টো তারা আমাকে ক্রসফায়ার দেবে বলে হুমকি দেয়। তাই আমি নিরুপায় হয়ে যখন একটি রশি দিয়ে তাদের বেধেঁ ফেলতে চাই তখন তারা চোরের মত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারপরও আমি যখন তাদের ধরে রেখে প্রশাসনকে খবর দিতে প্রস্তুতি নিতে থাকি তখন স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ ইলিয়াছ তাদের নিয়ে যায়। যদিওবা এই ব্যাপারে ইউপি সদস্য মোঃ ইলিয়াছ এই ভূঁয়া সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অস্বীকার করে বলেন তারা নিজ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি বলেন সাংবাদিক নামধারী লোকেরা আমার কাছ থেকে আমার এলাকার বাসিন্দা আবদুল আলীর ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল কিন্তু আমি কিছু বলেনি। তবে কে ভূঁয়া কে সঠিক তা আমরা তেমন যাচাই করিনা। কারণ সাংবাদিকদের সাথে আমাদের তেমন উঠাবসা নেই। তবে ভবিষ্যতে এই ব্যাপারে সাবধান থাকব।
অন্যদিকে এই ভূঁয়া সাংবাদিকদের চাঁদাবাজির ব্যাপারে এই প্রতিবেদক বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেনকে অবিহিত করলে তিনি সাথে সাথে স্থানীয় গ্রাম পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠান এবং গ্রাম পুলিশ এই ভূঁয়া সাংবাদিকদের ব্যাপারে তাকে আবার অবিহিত করলে বাহারছড়ার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর মূহূর্তে ভূঁয়া সাংবাদিকরা নোয়াখালী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে তিনি জানান। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন আমার দায়িত্বরত এলাকায় কোনো কথিত সাংবাদিক নাম দিয়ে কোনো চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলবে না। যদি কেউ এই রকম করে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কথিত সিএনএন বাংলা টিভির সাংবাদিক দিদারুল আলম জিসানের ফোনে সংযোগ না পাওয়াই তার বক্তব্য নেওয়া যাইনি।
কক্সবাজার/রিফাত/জাফরুল